বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনের শান্তিপূর্ণ হলেও তাকে ভোট গণনায় অন্যায়ভাবে পরাজিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচিত মুখ আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। শিগগিরই এ বিষয়ে আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) উপনির্বাচনে বগুড়ার দুই আসনে পরাজয়ের পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমি অশিক্ষিত, আমি এমপি নির্বাচিত হলে আমাকে স্যার ডাকতে হবে। দেশের সম্মান যেতো; তাই ওইসব সাহেবরা আমার ফলাফল পাল্টে দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে ওই সাহেবদের দেখিয়ে দিতাম আমিও পারি।“
আলোচিত হিরো আলম আরও বলেন, “আজকে সারাদেশের মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমার মনে হয়েছে আমি প্রধানমন্ত্রীর ভোট করছি। তখন গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। সবার যে ভালোবাসা পেয়েছি তা ভুলবার নয় “
এ নির্বাচনের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবেন কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, “এমন কারচুপির ভোট হলে ভবিষ্যতে মানুষ নির্বাচন করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলবে।”
আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম বলেন, “নির্বাচনের পরিবেশ ভালো ছিল। তবে নন্দীগ্রামের ফলাফল ঘোষণা করার সময় তার সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরে বাকী ১০ কেন্দ্রের ফলাফল আলাদা ঘোষণা না করে মোট ফলাফল ঘোষণা করেছে “
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “কেন ওই ১০ কেন্দ্রের ফলাফল একসাথে ঘোষণা করা হলো? এখানেই কারচুপি করা হয়েছে “
বগুড়া-৪ আসনে হিরো আলম একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। এই আসনে জয়লাভ করেছেন ১৪ দলের শরিক প্রার্থী জাসদের (ইনু) এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। মশাল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। ১১২ কেন্দ্রে তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটে পরাজিত হন হিরো আলম। এই আসনে ভোট পড়েছে ২৩.৯২%।
বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ১৪৩ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে রাগেবুল আহসান রিপু ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দ পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট। জাপার প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর পেয়েছেন ছয় হাজার ৯৯৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম একতারা প্রতীকে পেয়েছেন পাঁচ হাজার ২৭৪ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার বাদল কুড়াল প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ৮১১ ভোট।
বুধবার রাতে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এ ফল ঘোষণা করেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বগুড়া-৪ ও ৬ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।