বিভিন্ন উৎসবকে সামনে রেখে গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধি এদেশের মানুষের কাছে নতুন কিছু নয়৷ বিশেষ করে শবেবরাত এলেই হুহু করে এর দাম বেড়ে যায়। তবে এবার শবেবরাতে গরুর মাংলসের দাম পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। শবেবরাতকে সামনে রেখে গত ২ সপ্তাহে ৩ ধাপে ৫০ টাকা করে দাম বাড়িয়ে ৮০০ করা হয়েছে।
প্রতি বছর এই সময় গরু ও খাসির মাংসের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এবার খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। ফলে মাত্র ১৫ দিনের মাথায় গরুর মাংস কেজিতে বাড়ল ১০০ টাকা এবং খাসির মাংসে বাড়ল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
অথচ বাজারে গরু বা খাসির কোনো সংকট দেখা দেয়নি বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক সমস্যাও সৃষ্টি হয়নি, যার কারণে গরু বা খাসির মাংসের দাম বাড়াতে পারে। শবেবরাত এলেই মাংসের চাহিদা বাড়ে তাই সিন্ডিকেটগুলোও দাম বাড়ায়। এ ছাড়া মাংসের দাম বৃদ্ধির পেছনে আর অন্য কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে সারাদেশে গরুর মাংসের চাহিদা বেড়ে যায়। আর এই বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করেই গরুর মাংসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। একটি চক্র অহেতুক পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেশের জনগণের অর্থ লুটপাটে নিচ্ছে। বিষয়টি ‘সামাজিক সংক্রমণ’র মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতেও রাজধানীতে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা। কিন্তু ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হঠাৎ গরুর মাংসের দাম বেড়ে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা এবং ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বেড়ে হয়েছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায় দাঁড়ায়। যদিও মঙ্গলবার (৭ মার্চ) টিসিবির মূল্য তালিকায় প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা লেখা রয়েছে, তবে রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ দামে কোথাও গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়নি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এক কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকায়।
মোহাম্মদপুর কাঁচা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরুর মাংসের দোকানে লম্বা লাইন৷ প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস ক্রেতা মোবারক কাজী প্রতিবেদককে জানান, গরুর মাংসের দাম চড়া, কিন্তু ছোট মেয়েটাকে কিছুতেই বোঝাতে পারলাম না। তাই ৫০০ গ্রাম গরুর মাংস কিনলাম ৪০০ টাকা দিয়ে। গরুর মাংস আর গরিবের নাগালে রইলো না।