বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক:
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২১, ০১:৫৯
দিনাজপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পলিত হয়েছে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের জানমাল রক্ষাকালে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মত্যাগকারী পুলিশ সদস্যদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে দিনটি সারাদেশে পালন করা হয়। দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিপিএম, পিপিএম (বার) বলেছেন, আজকে আমরা যারা ব্যক্তিজীবন, ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিরাপদে ভোগ করছি এর পেছনে পুলিশের ব্যাপক অবদান রয়েছে। আমরা আমাদের সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করি দেশের মানুষের সেবা করার । দেশের অপরাধ দুর্নীতিকে রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি আরো বলেন, পুলিশের চোখের পাতা কখনো এক হয় না।
পুলিশ সদস্যরা সারারাত জেগে থাকে এ দেশের সু-নাগরিকদের জন্য। করোনা কালে পুলিশ নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে সামনে থেকে কাজ করেছে। পুলিশের সদস্যরা নিজের জীবনকে বাজি রেখে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের লাশ দাফন করেছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। গতকাল সোমবার (১ মার্চ) দুপুরে জেলা পুলিশের আয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে 'পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২১' উপলক্ষে পুলিশ লাইন্স হলরুমে আলোচনা সভায় কথাগুলো বলেন তিনি।
পুলিশ সদস্যদের পরিবারের যে কোন প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের যেমন অগ্রণী ভুমিকা ছিলো, তেমনি এই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য এবং দেশের উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি পুলিশ সদস্যদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হয়ে দায়িত্বপালন করতে বলেন। পাশাপাশি সহকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উপস্থিত প্রত্যেক পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান। এর আগে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন পুলিশ লাইন্স মাঠে দিবসটি উপলক্ষে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উতস্বর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং গার্ড অব অনার প্রদান করেন। শেষে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভা শেষে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তায় কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত জেলার ২৬ জন পুলিশ পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা উপহার প্রদান করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। প্রীতিভোজ শেষে বিকেলে পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সদস্যদের মাঝে প্রীতি ক্রিকেট ও ভলিবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, নিহত পুলিশ সদস্যদের স্বজনরা ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জীবনে যে বসয়ে হাবিবার দৌড়ঝাঁপ করে বাড়ির উঠান মাতিয়ে রাখার কথা ছিল, অথচ সেই বয়সে তাকে হাটতে হচ্ছে পায়ে বাঁশ বেঁধে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। তিন বছর বয়স থেকেই পায়ে বাঁশ বেঁধে কষ্ট করে হাটছে হাবিবা নামের এই শিশুটি। বলছিলাম কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ৬ বছরের শিশু হাবিবার কথা৷
একটি দুর্ঘটনা থামিয়ে দিয়েছে শিশুটির জীবনের গতি। শিশুটির যথাযথ চিকিৎসা করাতে না পেরেও পরিবারের কষ্টের শেষ নেই। তাকে নিয়ে চরম হতাশায় পরিবার। এমনকি সামান্য কিছু টাকার অভাবে কৃত্রিম পা লাগাতে পারছেন না বাবা-মা।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়নের বাদলা গ্রামের নুরুল আমিনের মেয়ে হাবিবা। বাবা রিকসা চালিয়ে পরিবারের ভরনপোষণ চালান।
হাবিবার বয়স তখন তিন বছর। নানীর সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চড়ে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিল। এ সময় সড়ক দুর্ঘটনায় হাবিবার এক পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই থেকে শুরু কষ্টের জীবনের সাথে হাবিবার জীবনে নতুন এক কষ্টের যোগ হয়। হাবিবার বাম পায়ের সঙ্গী যেন এক চিলতে বাঁশ।
স্বাভাবিকভাবে চলতে শিশু হাবিবার একটি কৃত্রিম পা দরকার। খুব বেশি টাকার ব্যাপার না। ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু হাবিবার পরিবারের কাছে এটাই অনেক বড় বোঝা। তবে বাবা-মা স্বপ্ন দেখেন তাদের প্রিয় সন্তানের পাশে কেউ না কেউ দাঁড়াবে। আবার কিছুটা স্বাভাবিকভাবে হাঁটবে ৬ বছরের এক মাত্র সন্তান হাবিবা।
শিশু হাবিবা জানায়, বাঁশ বেঁধে হাঁটতে তার অনেক কষ্ট হয়। সবার মন চায় হাঁটতে, খেলতে। স্কুলে যাইতে। তবে পারিনা।
হাবিবার বাবা নুরুল আমিন জানান, রিকশা চালিয়ে কোনমতে সংসার চালাই। মেয়ের চিকিৎসার টাকা পাবো কেমনে। মেয়ের চিকিৎসা ও একটি পা লাগাতে পারলে মেয়েটা একটু শান্তি পেত।
ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অতিশ দাস রাজীব জানান, আজ সোমবার (১ মার্চ) শিশু হাবিবাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল মেয়েটির বাবা। তার পায়ের অবস্থা দেখেছি। মেয়েটির জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে হাসপাতাল থেকে।
তিনি জানান, হাবিবার পায়ের বাঁশ খুলে আপাতত প্লাস্টিকের একটি শেল্টার লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। কৃত্রিম পা লাগানোর বিষয়ে ঢাকা মেডিকেলসহ বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করছি। সূত্র: সময় সংবাদ