আজ সোমবার, ২৯, মে ২০২৩

| কাল
০৮ঃ ০৬ঃ ২১ |

Logo
সর্বাধিক পঠিত | সর্বশেষ | গ্যালারী |

চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে করণীয়

ফাতেমাতুজ জোহরা (সুমা):

প্রকাশ: বুধবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ - ১০:০৪ এএম

মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে ১০ করণীয়:

চুল পড়া বর্তমান প্রজন্মের কাছে এখন একটি নিয়মিত ব্যাপার। প্রতিদিনই মাথা থেকে কিছু না কিছু চুল ঝরে পড়ছে যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি আর তাই তা দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আজকাল চুলের যত্নে তেল দেয়ার প্রবণতা একদমই কমে গেছে। তেলের তুলনায় মানুষ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে। আর এটিও একটি প্রধান কারণ চুল পড়ার।


আপনি বাহির থেকে কিভাবে যত্ন নিচ্ছেন সেটির উপরই শুধু নির্ভর করে না আপনার চুল কতটা ভালো থাকবে এবং কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে! আপনি কি কি খাবার খাচ্ছেন, কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করে আপনার চুলের সুস্থতা। চুল বিভিন্ন কারণে পড়তে পারে। অতিরিক্ত রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার, সঠিকভাবে চুলের যত্ন না নেওয়া, পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া ইত্যাদি। যে কারণেই আপনার চুল পড়ুক না কেন আপনি যদি এখন থেকেই নিয়মিত আপনার চুলের সঠিকভাবে যত্ন নেন তাহলে তা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব, অনেকের ক্ষেত্রে তা একেবারেই ভাল ফল দিবে আশা করা যায়।

আজকের পোষ্টে আমরা আলোচনা করব আপনি কি কি উপায়ে মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে পারেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে করণীয় :

চুল সাধারণত যে যে চুল কারণে পড়ে থাকে এবং আপনি যেই বিষয়গুলো এড়িয়ে চললে বা যা করার মাধ্যমে আপনার চুলকে সুস্থ, সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে পারেন সেগুলো নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা :

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে আপনি যে কোন জিনিসকেই ভালো ও সুস্থ রাখতে পারবেন। তাই চুলের ক্ষেত্রেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরি একটি বিষয়। বাহিরে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে বা চুল অপরিষ্কার থাকলে চুলে খুশকি ও বিভিন্ন ময়লা চুলের গোঁড়ায় জমে যায়। যার ফলে আপনার চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখতে হবে।

নিয়মতান্ত্রিক ঘুম :

চুলকে সুস্থ রাখতে ঘুম কিন্তু একটি অপরিহার্য বিষয়। আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমাতে অভ্যস্ত থাকেন তা কিন্তু আপনার ব্রেইন এর উপর প্রভাব ফেলে এবং সেখান থেকে কিন্তু প্রভাবটা সারা শরীরে যায়। আপনি যখন নিয়মিতভাবে ও পরিমিত পরিমাণে ঘুমাবেন তখন তা আপনার চুলের সুস্থতায় কার্যকরী হবে।

নারিকেল তেলের ব্যবহার :

চুলের যত্নে সবচেয়ে পুরনো ব্যবহার্য তেল হলো নারিকেল। নারিকেল তেলের পুষ্টিগুণ আপনার চুলকে আরো বৃদ্ধি করতে ও চুল পড়া রোধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বর্তমান যুগে বেশিরভাগ মানুষেরই চুলে তেল দিতে দেখা যায় না। আর যেটি চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ। চুলকে সুস্থ রাখতে আপনাকে চুলে তেল অবশ্যই দিতে হবে। নারিকেল তেলের পাশাপাশি আপনি অন্যান্য তেলের মিশ্রণ একসাথে করে চুলে দিতে পারেন।

পেঁয়াজের রসের ব্যবহার :

চুল পড়া বন্ধে পেঁয়াজের রস জাদুর মত কাজ করে। মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজের রস কার্যকরী। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগান। এক ঘন্টা পর পরিষ্কার পানি ও প্রাকৃতিক শ্যাম্পু দিয়ে দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

হট অয়েল ম্যাসাজ :

চুলের যত্নে হট অয়েল ম্যাসাজ বা বিভিন্ন তেলের সংমিশ্রণের ম্যাসাজ চুলের গোড়া মজবুত করতে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। নারিকেল তেল, টি ট্রি অয়েল, অ্যালোভেরা অয়েল, অলিভ অয়েল এই তেলগুলোকে হালকা গরম করে চুলে ম্যাসাজ করুন। গরম পানিতে একটি তোয়ালে ডুবিয়ে নিংড়ানোর পর চুলে জড়িয়ে রাখুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর তোয়ালে খুলে চুল প্রাকৃতিক শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

আমলকির ম্যাসাজ :

চুলের গোড়ায় আমলকি বেটে তা ভালভাবে ম্যাসাজ করুন এবং আধা ঘন্টা পর প্রাকৃতিক শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

মেথির ব্যবহার :

মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে মেথির ব্যবহার অকল্পনীয়। মেথিতে থাকে পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি, প্রোটিন যা চুলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। চুল অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। তারপর তা বেটে লেবুর রসের সাথে মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন এবং আধা ঘন্টা পর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন ব্যবহারেই আপনি অসাধারণ ফল পাবেন।

পুষ্টিকর ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ :

বাহির থেকে চুলের যত্ন নিলেই হবে না আপনাকে ভেতর থেকে আপনার চুলকে শক্তিশালী ও মজবুত করে তুলতে হবে। আর তার জন্য পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার এর কোন বিকল্প নেই। আর এটিই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী পদ্ধতি চুলকে সুস্থ রাখতে। সামুদ্রিক মাছ, ডিম, দুধ, ভিটামিন ই যুক্ত খাবার আপনার চুল বৃদ্ধি ও চুল পড়া রোধে খুবই উপকারী।

যতই বাহির থেকে আপনার চুলের যত্ন নেন না কেন শরীর‌ যদি আপনার সুষম খাবার না পায় তাহলে আপনার চুল বৃদ্ধি ও চুল পড়া বন্ধ কখনোই সম্ভব নয়। তাই চুলের সুস্থতায় ভেতরের থেকে যত্ন নেওয়া আবশ্যক।

যা এড়িয়ে চলবেন :

চুলে রাসায়নিক উপাদান কম ব্যবহার করা অতিরিক্ত রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহারও চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ। বাজারে বিভিন্ন ধরনের শ্যাম্পু ও সাবান পাওয়া যায় যা চুলে ব্যবহার করার কারণে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই বাহিরের শ্যাম্পু ব্যবহার না করে ঘরোয়া উপাদানে তৈরি শ্যাম্পু বা ভেষজ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন চুলের জন্য। এতে আপনার চুল প্রাকৃতিক উপায়েই অনেকটা ভালো ও পরিষ্কার থাকবে।

ভেজা চুল না আঁচড়ানো :

আমাদের অনেকেরই অভ্যাস থাকে যে গোসলের পর বা চুল ভেজানোর পর চুলে চিরুনি লাগানো। কিন্তু এটি করা যাবে না কারণ আপনারা চুল ভেজা হওয়ার কারণে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। যার কারণে চুল পড়া ও চুল ঝরার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তাই ভেজা চুল আঁচড়ানো যাবে না। তাড়াতাড়ি শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা যাবে না কারণ হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস আপনার চুলের জন্য ক্ষতিকর। তাই চুলকে প্রাকৃতিকভাবেই শুকাতে হবে।

পরিশেষে চুল বিভিন্ন কারণে পড়তে পারে মানসিক উদ্বেগ, সুষম খাবারের অভাব, অপর্যাপ্ত ঘুম, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। নির্দিষ্ট পরিমাণ চুল পড়া স্বাভাবিক কিন্তু নিয়মিত ও অতিরিক্ত পড়া দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই চুলের যত্নে বাহির থেকে যত্নের পাশাপাশি ভেতর থেকে যত্নটাও খুব বেশি জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম আপনার শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে ফলে প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সমানভাবে পৌঁছে, যার ফলে চুলের বৃদ্ধি হয়।

মাথার চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে আপনি উপরে পয়েন্টগুলো যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করেন তাহলে আপনি চুলপড়ার দুশ্চিন্তা থেকে খুব শীঘ্রই মুক্তি পাবেন আশা করছি।

বার্তাজগৎ২৪/১৩ ডিসেম্বর/বার্তাজগৎ ডেস্ক

সর্বমোট শেয়ারঃ
Facebook Twitter WhatsApp Messanger
আমাদের অ্যাপ

স্বত্ব © ২০২২ বার্তাজগৎ২৪ Design & Developed By softicode